প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও প্রথম রমজান থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পরিবহন চালক শ্রমিক ও পথচারীদের মাঝে তৈরিকৃত ইফতার বিতরণ করেন ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজি।
প্রথম ও দ্বিতীয় রমজানে ইফতারের এক ঘণ্টা আগে থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তৈরিকৃত ইফতার হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন ফেনী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী।
শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পরিবহন চালক শ্রমিক নয় আশপাশের মসজিদ, মাদ্রাসা ও সড়কে পথচারীদের মাঝেও তিনি তৈরিকৃত ইফতার তুলে দেন। এছাড়া প্রতিদিন অসহায়, হতদরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষরা তার ব্যক্তিগত অফিসের সামনে বসে ইফতার করেন।
ইফতারের পরে রোজাদারদের জন্য চা চক্রেরও আয়োজন করেন তিনি। আর এসব চা চক্র আয়োজন চলে রাত দশটা পর্যন্ত। ইফতার ও চা চক্রে অংশগ্রহণ করতে পেরে খুশি হাজারো মানুষ।
৮০ বছর বয়সি এক বৃদ্ধা পথচারি জানায়, গত কয়েক বছর রমজানের ইফতার আমি এখান থেকে নিয়েছি। এই বছরও এসেছি এখানের ইফতার নিতে। মেয়রের ইফতার বাসায় নিয়ে আমার পরিবারের সাথে খাই। এসময় বৃদ্ধা মেয়রের জন্য দোয়া করেন। আল্লাহপাক মেয়রকে দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুন।
রহমত উল্লাহ নামে একজন ভ্যান চালক জানায়, আমরা কোম্পানির মাল বিক্রি করতে প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে যাই। মাল বিক্রি শেষে ফেরার পথে মেয়রের দেয়া ইফতার নিয়ে যাই। সারাদিন পরিশ্রম করে ইফতার তৈরি করা সম্ভব হয়না। ত্রিশ রমজানের মধ্যে প্রায় সব রমজানের ইফতারি এখান থেকে নিয়ে করি।
চট্টগ্রাম থেকে বাসে করে ঢাকা যাচ্ছিলেন কাসেম আলী। ফেনীতে এসে বাসের জানালা দিয়ে একটি ইফতারের প্যাকেট হাতে পেয়ে অনেক খুশি। অনেক উৎফুল্ল কন্ঠে চিৎকার করে মেয়র স্বপন মিয়াজীকে বলেন, ইফতার করা নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম কখন, কোথায় করব ইফতার। এখন আর চিন্তা নেই, নিরাপদে পরিবহনে বসেই ইফতার করতে পারব। তখন মেয়র উত্তরে বলেন, আপনাদের জন্যই আমার এই প্রয়াস। ট্রাক চালক মোস্তফা বলেন, রাস্তায় দাঁড়িয়ে ইফতার করতে অনেক সমস্যা হয়। সময় ও ইফতার কোনটার মিল হয় না। সেজন্য অনেক সময় আমরা পানি দিয়ে ইফতার করি। কিন্তু গত কয়েক বছরে দেখছি মহিপালে আসলে ইফতারের প্যাকেট পাই। প্যাকেটের মধ্যে থাকা ইফতার দিয়ে ইফতার করি। ইফতার করা নিয়ে আর চিন্তা করতে হয় না।
ইফতার বিতরণের দায়িত্বে থাকা মাঈন উদ্দিন সুমন বলেন, মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীর নিজ অর্থায়নে প্রতিদিন রোজাদারদের মধ্যে তৈরি করা ইফতারি বিতরণ করা হয়। সড়কে যাতায়াতকারীরা মেয়রের এ ইফতার পেয়ে অনেক উপকৃত হচ্ছেন বলে জানান তিনি।
মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, রমজান মাসে যত বেশি মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায় ততো বেশি সওয়াব। তাই প্রতি বছরের রমজানে আমার নিজ উদ্যোগে সহাসড়করে পরিবহন চালক, শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে আমি ইফতার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। তাদের হাতে ইফতারের একটি প্যাকেট তুলে দিতে পারলে আমার নিজের কাছে স্বস্তি লাগে। আমি যতদিন বাঁচবো ততদিন এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখব। এছাড়া আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ইফতারের পাশাপাশি এখানে সেহরির আয়োজনের কথা জানান তিনি।
মেয়র আরো বলেন, প্রথম রমজানে আমরা ৫’শ প্যাকেট দিয়ে শুরু করেছি। রমজান যত বাড়ে ততই প্যাকেটের পরিমাণও বাড়ে। ৫’শ থেকে শুরু হয়েছে কয়েকদিন পরে ১ হাজার, এরপর ১৫’শ প্যাকেট পর্যন্ত আমরা এখানে বিতরণ করি। যত বেশি চাহিদা হবে তত বেশি আমরা দিব। যাতে করে কোনো মানুষ খালি হাতে না যায়।